Menu |||

‘ক্ষমা চাই, আর বাজেট দিয়েন না’ -কাজী ফিরোজ রশীদ

গত ১ জুন বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে ভ্যাট এবং ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক নিয়ে সংসদে সরকারি, বিরোধী দল উভয়ের সমালোচনা সইতে হচ্ছে মুহিতকে।

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বাজেট নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে মুহিতকে উদ্দেশ করে বলেন, “অর্থমন্ত্রীর আছে আমরা ক্ষমা চাই। আপনার কাছে আমরা আর বাজেট চাই না।”

মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সেই বাজেট নিয়ে সংসদে মন্ত্রীদের সমালোচনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

“অবাক লাগে যখন দেখি, মন্ত্রীরা এই সংসদে দাঁড়িয়ে বাজেটের সমালোচনা করছেন। এই বাজেট তো আপনারা মন্ত্রিসভায় পাস করে এসেছেন। আপনারা কেবিনেটে কী পাস করলেন যে তার সমালোচনা করছেন সংসদে এসে। এর নৈতিক অধিকার কি আপনাদের আছে?”

আগের দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা অর্থমন্ত্রীর সমালোচনামুখর হয়েছিলেন। একদিন বাদে সংসদে আলোচনায় ছিল একই ঝাঁঝ।

ফিরোজ রশীদ বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন এটা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট। কিন্তু এটা মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। আমার মতে এই বাজেট হচ্ছে ২০১৭ সালে জনগণের জন্য শ্রেষ্ঠ তামাশা। এটা কোনো বাজেট হয়নি।”

এই বাজেটের কারণে সরকারের ‘ভোট নষ্ট হবে’ বলে উৎকণ্ঠাও ফুটে উঠেছে বিএনপিবিহীন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতা ফিরোজ রশীদের কথায়, যিনি এক সময় আওয়ামী লীগে যুক্ত ছিলেন।

“আপনি কী বাজেট দিয়েছেন? আগামী বছর তো ভোট। এটা কী ভোটের বাজেট দিলেন, না ভোট নষ্ট করার বাজেট দিলেন? ভোটারদের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করলেন আর তারপর তাদের কাছে ভোট চান, দেশের মানুষ কি এতই পাগল!”

ব্যাংকে আমানতে আবগারি শুল্ক আরোপের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সংসদ সদস্য ফিরোজ রশীদ।

“আবগারি শুল্ক ধরা হয় মদ-গাঁজা-আফিম-ভাং-বিড়ি-সিগারেট-তামাকের উপর। আমার নিজের টাকা আমি ব্যাংকে গচ্ছিত রাখছি, তার উপর কর বসিয়ে দিলেন!”

সেই সঙ্গে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে না। সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবে না। কোথায় রাখবে টাকা?”

অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ‘হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটকারীদের’ প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, “এই লুটপাটের সাথে কারা জড়িত? আপনার যদি সৎ সাহস থাকে সংসদে তাদের নাম প্রকাশ করুন। শেয়ার মার্কেট নিয়ে কেলেঙ্কারির পর ইব্রাহিম খালেদ একটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন। তাতে সবই আপনার নিজেদের লোকের নাম এল। প্রকাশ করলেন না কেন? ব্যবস্থা নিলেন না কেন?

“একদিন জনগণ কিন্তু ঠিকই ব্যবস্থা নেবে। গরিবের উপর ট্যাক্স বসাবেন আর লুটেরাদের প্রটেকশন দেবেন। এটা তো জনগণ মেনে নেবে না। ভাত দেওয়ার জো নেই কিলানোর গোসাই।”

বিড়ির উপর কর বাড়ানোর সমালোচনাও করেন এইচ এম এরশাদের দলের এই সংসদ সদস্য। কৃষি যন্ত্রের উপর ভ্যাট আরোপের সমালোচনাও করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন ব্যাংকের অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, “ব্যাংকের মালিকরা

প্রায়ই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে মুক্ত হস্তে শত শত কোটি টাকা দান করেন। বছরে প্রায় ৮/১০ বার তাদের বড় বড় ফটো ওঠে।

 

“একজনকে দেখি, ইয়া বড় দাড়ি! গিয়ে ফটো উঠাচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে টাকার বস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। খুবই শুভ উদ্যোগ এটা। কিন্তু তারা যে টাকা দিচ্ছেন, এটা তো তাদের নয়। এই টাকা জনগণের। জনগণের জামানতে ডিভিডেন্ট না দিলে লভ্যাংশ কম দিয়ে, কারণে-অকারণে সার্ভিস চার্জ কেটে নিয়ে শত শত কোটি আয় করছেন। আর সেই টাকা অকাতরে দান করে পরের ধনে পোদ্দারি করছে। এটা অনৈতিক। এটা তদন্তে একটি তদন্ত টীম করা দরকার।”

“এই ব্যবসায়ীদের দুটো হাত থাকে। একটা থাকে প্রধানমন্ত্রীর দিকে। আরেকটা থাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দিকে। এটা হচ্ছে তাদের ব্যবসার কৌশল,” বলেন তিনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ফিরোজ রশীদ বলেন, “নতুন স্লোগান উঠেছে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ। সত্যিই তো সময় এখন আপনাদের। যা ইচ্ছা তাই খাবেন। যা ইচ্ছা তা বলবেন।

“দয়া করে ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। ক্ষমতা আছে বলেই কাউকে আঘাত আর অপমানিত করবেন না। আজ আপনি অনেক শক্তিশালী। মনে রাখবেন সময় আপনার থেকে অনেক শক্তিশালী এবং সময় খুব ভালো প্রতিশোধ নিতে পারে।”

“আপনার ক্ষমতার দম্ভে কেউ এখন চুপ থাকলে তার মানে এই নয় যে তার কষ্ট হয়নি। বুঝতে হবে সে সময়ের অপেক্ষা করছেন মাত্র,” ক্ষমতাসীনদের হুঁশিয়ার করেন এই বিরোধী নেতা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

‘ক্ষমা চাই, আর বাজেট দিয়েন না’ -কাজী ফিরোজ রশীদ

গত ১ জুন বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে ভ্যাট এবং ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক নিয়ে সংসদে সরকারি, বিরোধী দল উভয়ের সমালোচনা সইতে হচ্ছে মুহিতকে।

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বাজেট নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে মুহিতকে উদ্দেশ করে বলেন, “অর্থমন্ত্রীর আছে আমরা ক্ষমা চাই। আপনার কাছে আমরা আর বাজেট চাই না।”

মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সেই বাজেট নিয়ে সংসদে মন্ত্রীদের সমালোচনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

“অবাক লাগে যখন দেখি, মন্ত্রীরা এই সংসদে দাঁড়িয়ে বাজেটের সমালোচনা করছেন। এই বাজেট তো আপনারা মন্ত্রিসভায় পাস করে এসেছেন। আপনারা কেবিনেটে কী পাস করলেন যে তার সমালোচনা করছেন সংসদে এসে। এর নৈতিক অধিকার কি আপনাদের আছে?”

আগের দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা অর্থমন্ত্রীর সমালোচনামুখর হয়েছিলেন। একদিন বাদে সংসদে আলোচনায় ছিল একই ঝাঁঝ।

ফিরোজ রশীদ বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন এটা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট। কিন্তু এটা মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। আমার মতে এই বাজেট হচ্ছে ২০১৭ সালে জনগণের জন্য শ্রেষ্ঠ তামাশা। এটা কোনো বাজেট হয়নি।”

এই বাজেটের কারণে সরকারের ‘ভোট নষ্ট হবে’ বলে উৎকণ্ঠাও ফুটে উঠেছে বিএনপিবিহীন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতা ফিরোজ রশীদের কথায়, যিনি এক সময় আওয়ামী লীগে যুক্ত ছিলেন।

“আপনি কী বাজেট দিয়েছেন? আগামী বছর তো ভোট। এটা কী ভোটের বাজেট দিলেন, না ভোট নষ্ট করার বাজেট দিলেন? ভোটারদের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করলেন আর তারপর তাদের কাছে ভোট চান, দেশের মানুষ কি এতই পাগল!”

ব্যাংকে আমানতে আবগারি শুল্ক আরোপের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সংসদ সদস্য ফিরোজ রশীদ।

“আবগারি শুল্ক ধরা হয় মদ-গাঁজা-আফিম-ভাং-বিড়ি-সিগারেট-তামাকের উপর। আমার নিজের টাকা আমি ব্যাংকে গচ্ছিত রাখছি, তার উপর কর বসিয়ে দিলেন!”

সেই সঙ্গে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে না। সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবে না। কোথায় রাখবে টাকা?”

অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ‘হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটকারীদের’ প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, “এই লুটপাটের সাথে কারা জড়িত? আপনার যদি সৎ সাহস থাকে সংসদে তাদের নাম প্রকাশ করুন। শেয়ার মার্কেট নিয়ে কেলেঙ্কারির পর ইব্রাহিম খালেদ একটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন। তাতে সবই আপনার নিজেদের লোকের নাম এল। প্রকাশ করলেন না কেন? ব্যবস্থা নিলেন না কেন?

“একদিন জনগণ কিন্তু ঠিকই ব্যবস্থা নেবে। গরিবের উপর ট্যাক্স বসাবেন আর লুটেরাদের প্রটেকশন দেবেন। এটা তো জনগণ মেনে নেবে না। ভাত দেওয়ার জো নেই কিলানোর গোসাই।”

বিড়ির উপর কর বাড়ানোর সমালোচনাও করেন এইচ এম এরশাদের দলের এই সংসদ সদস্য। কৃষি যন্ত্রের উপর ভ্যাট আরোপের সমালোচনাও করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন ব্যাংকের অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, “ব্যাংকের মালিকরা

প্রায়ই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে মুক্ত হস্তে শত শত কোটি টাকা দান করেন। বছরে প্রায় ৮/১০ বার তাদের বড় বড় ফটো ওঠে।

 

“একজনকে দেখি, ইয়া বড় দাড়ি! গিয়ে ফটো উঠাচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে টাকার বস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। খুবই শুভ উদ্যোগ এটা। কিন্তু তারা যে টাকা দিচ্ছেন, এটা তো তাদের নয়। এই টাকা জনগণের। জনগণের জামানতে ডিভিডেন্ট না দিলে লভ্যাংশ কম দিয়ে, কারণে-অকারণে সার্ভিস চার্জ কেটে নিয়ে শত শত কোটি আয় করছেন। আর সেই টাকা অকাতরে দান করে পরের ধনে পোদ্দারি করছে। এটা অনৈতিক। এটা তদন্তে একটি তদন্ত টীম করা দরকার।”

“এই ব্যবসায়ীদের দুটো হাত থাকে। একটা থাকে প্রধানমন্ত্রীর দিকে। আরেকটা থাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দিকে। এটা হচ্ছে তাদের ব্যবসার কৌশল,” বলেন তিনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ফিরোজ রশীদ বলেন, “নতুন স্লোগান উঠেছে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ। সত্যিই তো সময় এখন আপনাদের। যা ইচ্ছা তাই খাবেন। যা ইচ্ছা তা বলবেন।

“দয়া করে ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। ক্ষমতা আছে বলেই কাউকে আঘাত আর অপমানিত করবেন না। আজ আপনি অনেক শক্তিশালী। মনে রাখবেন সময় আপনার থেকে অনেক শক্তিশালী এবং সময় খুব ভালো প্রতিশোধ নিতে পারে।”

“আপনার ক্ষমতার দম্ভে কেউ এখন চুপ থাকলে তার মানে এই নয় যে তার কষ্ট হয়নি। বুঝতে হবে সে সময়ের অপেক্ষা করছেন মাত্র,” ক্ষমতাসীনদের হুঁশিয়ার করেন এই বিরোধী নেতা।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।